আমরা কলেজ গড়েছি একটি চেতনা থেকে একটি উপলব্দি থেকে। দেশে বহু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে। তথাপি চারদিকে কলেজ ঘেরা পরিবেশে আরেকটি কলেজ গড়ার সাহস ও স্পর্ধা কেন আমাদের হয়েছিল! দীর্ঘদিন বিভিন্ন বেসরকারী ও সরকারী কলেজে শিক্ষকতা করার সময় কেবলই আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশে সাধারণের জন্য শিক্ষার যে পরিবেশ তা অরাজকতাপূর্ণ। উন্নত দেশে যেখানে একজন ছাত্র বা ছাত্রী উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সাথে সাথে আরও উন্নত চরিত্রের হয়, আরও ভদ্র ও মার্জিত হয়, আরও জ্ঞানী হয়; সেখানে আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এস এস সি পাশ করে ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে অসচেতন, গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাহীন এবং লেখাপড়া বিমুখ হয়ে উঠেছে। আমরা মনে করি, এর কারণ আমাদের অধিকাংশ শিক্ষক ও অধ্যক্ষ মহোদয়ের অপারঙ্গমতা এবং পরিচালক মন্ডলীর উদাসীনতা।
এছাড়া ২০-৩০% ছাত্র-ছাত্রী অকৃতকার্য হওয়াটাও প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরাট ব্যর্থতা। অবশ্য সামাজিক ও রাজনৈতিক অবক্ষয়ও এর জন্য দায়ী। তবে এ সকলকে অতিক্রম করেও কিছু সংখ্যক কলেজে ছাত্র-ছাত্রীরা ভাল ফলাফল অর্জন করছে। আবার ভাল ফলাফলই শিক্ষার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। ভাল ফলাফল অর্জনের সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের দেশজ কৃষ্টি ধারণ, পিতা-মাতা ও পরিবার পরিজনদেরও প্রতি মমত্ববোধ, সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকাও একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে দেশ পাবে শুধু স্বার্থপর একপাল চাকুরিজীবি যারা ঘুষ, দুর্নীতি দ্বারা এ অভাগা দেশকে আরও মলিন করে তুলবে।
যে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবং দৃঢ়ভাবে তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা থাকলে সাফল্য সুনিশ্চিত। আর এ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই গড়ে তোলা হয়েছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ভাল ছাত্র-ছাত্রী গড়ার সাথে সাথে ভাল মানুষ গড়ার প্রচেষ্টাই আমরা নিয়েছি।
কলেজের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অঞ্চলবাসীর গভীর বিশ্বাস জন্মেছে। ধনী-গরীব, হিন্দু-মুসলিম, দূরের-কাছের, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল শ্রেণির মানুষই তাদের সন্তানদের এ কলেজে পড়াতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আমরা চাই অত্র অঞ্চল শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক- ঘরে ঘরে সুসন্তান এবং উচ্চ শিক্ষিত মানুষ গড়ে উঠুক।
আমাদের সকল শিক্ষকই উচ্চ শিক্ষিত। শিক্ষাজীবনে ভাল ফলাফল অর্জনকারীদেরই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বাছাইয়ের ভিত্তিতে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনরুপ সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হয় না। ।
এ কলেজ থেকে প্রায় প্রতি বছরই এইচ এস সি পরীক্ষায় ১০০% ছাত্র-ছাত্রী পাশ করছে। প্রায় সকল ছাত্র-ছাত্রীরই এস এস সি অপেক্ষা এইচ এস সি পরীক্ষায় জিপিএ বৃদ্ধি পায়। প্রতি বছরই এ প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বহু ছাত্র-ছাত্রী সরকারি মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্টায়ত্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তাছাড়া ২০০৬ সালের এইচ এস সি পরীক্ষায় পাশের হারের দিক থেকে কলেজটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সেরা ১০ কলেজের মধ্যে ৮ম স্থান এবং ২০০৭ সালের এইচ এস সি পরীক্ষায় ২য় স্থান লাভ করে।
চারদিকের এত অস্থিরতার মধ্যেও মানুষ যে আমাদের উপর আস্থা রাখছেন, এত দূরত্ব ঠেলে ছেলে-মেয়েদেরকে এ প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন, তাদের এ বিশ্বাসকে বাস্তবায়ন করাই আমাদের ব্রত। ভাল ছাত্র-ছাত্রী গড়ার সাথে সাথে ভাল মানুষ গড়ার প্রচেষ্টাই আমরা নিয়েছি।
Professor M.E.H Arif
M.E.H. Arif College